ঢাকা , বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫ , ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
বিচারকের পুত্র হত্যার প্রতিবাদে গাইবান্ধায় মানববন্ধন ফরিদপুরের মধুখালীতে ডাকাত রানা ৬৫ পিস ইয়াবাসহ আটক শ্যামনগরে অস্ত্র গুলি ও বিভিন্ন মালামালসহ ডাকাত আটক তেঁতুলিয়ায় বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে প্রেমিকার অনশন শিবচরে শুরু হয়েছে খেজুরের রস ও গুড় তৈরির মৌসুম হাটহাজারীর যুবলীগ নেতা হত্যাসহ ১৬ মামলার আসামি গ্রেফতার ফুলবাড়িয়ায় ইউপি চত্বরে ককটেল ও পেট্রোল বোমা উদ্ধার কালিয়াকৈরে পৃথক স্থানে ককটেল ও পেট্রোল বোমা বিস্ফোরণ কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে জামায়াত নেতার পিকআপ পুড়িয়ে দিল দুর্বৃত্তরা নগরকান্দায় বিএনপির নেতাকর্মীদের জয়বাংলায় অবস্থান গলাচিপায় আমন ধানের বাম্পার ফলন প্রায় ৬শ’ কোটি টাকা বিক্রির আশা শিবচরে নিষিদ্ধ আ’লীগের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের আশঙ্কায় পাহারা নলছিটিতে কৃষাণীদের মাঝে বিনামূল্যে সবজির বীজ ও চারা বিতরণ গাবতলীতে ক্রিকেট ফাইনাল টুর্নামেন্ট উদ্বোধন শ্যামনগর হাসপাতালে বেড সংকট মেঝেতে শুইয়ে চিকিৎসা রামগতিতে ইটভাটা বন্ধের প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করে শ্রমিকদের মানববন্ধন কুমিল্লা চৌদ্দগ্রামে আগ্নেয়াস্ত্রসহ যুবক আটক দশমিনায় জাটকায় সয়লাব মাছ বাজার নায়িকাকে জড়িয়ে ধরায় ৯ দিনের কারাদণ্ড মুক্তির আগেই নজর কেড়েছে রণবীরের ‘ধুরন্ধর’

পুনরায় ট্রেন চলাচলে আগ্রহী হচ্ছে না ভারত

  • আপলোড সময় : ১৮-১১-২০২৫ ০১:২৫:৩৯ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৮-১১-২০২৫ ০১:২৫:৩৯ অপরাহ্ন
পুনরায় ট্রেন চলাচলে আগ্রহী হচ্ছে না ভারত
পুনরায় যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলে বাংলাদেশ চাইলেও আগ্রহী হচ্ছে না ভারত। গতবছরের আগস্টে দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দুদেশের মধ্যে তিনটি ট্রেন চলাচল পুনরায় শুরু করতে আনুষ্ঠানিকভাবে দুদফা ভারতকে চিঠি দেয়া হয়েছে। কিন্তু নিরাপত্তা ঝুঁকির কথা বলে ভারত ট্রেনগুলো চালাতে রাজি হয়নি। ইতিমধ্যে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ভারতকে তৃতীয়বারের মতো চিঠি দেয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বিগত দীর্ঘ ১৫ মাস ধরে আন্তঃদেশীয় মৈত্রী, মিতালি ও বন্ধন এক্সপ্রেস ট্রেনের চলাচল বন্ধ রয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি ঘিরে তৎকালীন সরকার উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে গত বছরের জুলাইয়ে সারা দেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ ঘোষণা করে। ওই সময় বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে চলাচলরত তিনটি আন্তঃদেশীয় ট্রেনেও যাত্রী পরিবহন বন্ধ হয়ে যায়। আর তা এখনো চালু হয়নি। বাংলাদেশ রেলপথ মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, জানা গেছে, আগামী বছরের মার্চে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা সংক্রান্ত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নিয়ে ৩৮তম ‘ইন্ট্রা-গভর্নমেন্ট রেলওয়ে মিটিং’ (আইজিআরএম) হওয়ার কথা রয়েছে। তারই প্রস্তুতিমূলক সভায় ট্রেন চালানোর বিষয়ে ভারতকে তৃতীয়বারের মতো চিঠি দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বাংলাদেশ রেলওয়েতে আন্তঃসরকার রেলওয়ের বৈঠকের আলোচ্য সূচি নিয়ে প্রস্তুতিমূলক ওই সভা হয়। এক চিঠিতে সভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলা হয়। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আন্তঃদেশীয় মৈত্রী, মিতালি ও বন্ধন এক্সপ্রেস ট্রেন পুনরায় চালু করার বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে রেলপথ মন্ত্রণালয় আবারো চিঠি দেবে। একই সঙ্গে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে চলাচলরত যাত্রীবাহী ট্রেনের সঙ্গে যাত্রীদের অতিরিক্ত মালপত্র পরিবহনের জন্য লাগেজ ভ্যান সংযুক্ত করার বিষয়ে ভারতীয় রেলওয়েকে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পাঠানো হবে। তাছাড়া রাজশাহী-কলকাতা রুটে ট্রেন পরিচালনার বিষয়ে অনুমোদন চেয়ে মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকারকে রেলওয়ে চিঠি দেবে। সূত্র জানায়, ভারতের সাথে ট্রেন যোগাযোগে বাংলাদেশের পদ্মা সেতুকে ব্যবহারের পরিকল্পনা রয়েছে। সেজন্য বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যাত্রীবাহী মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনের চলাচলের রেলওয়ে পথ বদল করতে চায়। পদ্মা সেতু দিয়ে মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেন পরিচালনার বিষয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ রেলওয়ে ভারতীয় রেলওয়েকে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পাঠাতে যাচ্ছে। প্রস্তাবে রাতের বেলা ট্রেন পরিচালনার বিষয়টিও উল্লেখ করা হবে। একই সঙ্গে আপ লাইনে ক্রস ওভার তৈরির বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। আর দুদেশের মধ্যে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল আবার শুরু হলে ভারতকে ঢাকায় বন্ধ থাকা ভিসার প্রক্রিয়া চালু করতে হবে। তবে এখনো ভারতের দিক থেকে বাংলাদেশকে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলের জন্য নিরাপদ মনে করা হচ্ছে না। সেজন্যই পণ্যবাহী ট্রেন চলাচলের অনুমতি দেয়া হলেও যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। যদিও যাত্রীবাহী ট্রেন চালানোর বিষয়ে গত বছরের আগস্টেই ভারতীয় রেলওয়ে বোর্ডের সঙ্গে বাংলাদেশ রেলওয়ে বেশ কয়েকবার অনানুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ায় যোগাযোগ করে। কিন্তু ভারত তাতে সায় দেয়নি। তবে গত বছরের ১৯ আগস্ট বাংলাদেশ রেলওয়ের পরিচালন বিভাগের এক চিঠির বিপরীতে ভারত পণ্যবাহী ট্রেন চালুর বিষয়ে অনুমতি দেয়। তার আগে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে দেয়া রেলপথ মন্ত্রণালয়ের এক চিঠিতে আন্তঃদেশীয় যাত্রীবাহী মিতালি এক্সপ্রেস ট্রেন, মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেন ও বন্ধন এক্সপ্রেস ট্রেন পুনরায় চলাচলের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বাংলাদেশ রেলওয়ের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়। সূত্র আরো জানায়, অস্থিতিশীল পরিস্থিতির মধ্যে নিরাপত্তা ঝুঁকির কথা বলে বাংলাদেশ রেলওয়ে গত বছরের ১৮ জুলাই দেশের অভ্যন্তরে সব ধরনের ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছিল। তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তারপর ১২ আগস্ট সারা দেশে ট্রেন চলাচল শুরু হলেও বাংলাদেশ-ভারত যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হয়নি। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আটটি ইন্টারচেঞ্জ থাকলেও পাঁচটি সচল রয়েছে। তার মধ্যে তিনটি পথে যাত্রীবাহী ট্রেন নিয়মিত চলাচল করতো। বিগত ২০২৪ সালের ১৭ জুলাই রাতে মিতালি এক্সপ্রেস ট্রেনটি নিউ জলপাইগুড়ি থেকে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনে পৌঁছায়। ট্রেনটি পরদিন ১৮ জুলাই রাতে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থেকে নিউ জলপাইগুড়ির উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ট্রেনটির যাত্রা করা সম্ভব হয়নি। তারপর দীর্ঘদিন মিতালি এক্সপ্রেস ট্রেনের খালি রেক ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনে আটকে ছিলো। পরে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ট্রেনের রেক ভারত সীমান্তে পৌঁছে দেয়া হয়। আর ঢাকা-নিউ জলপাইগুড়ির মধ্যে চলাচলকারী মিতালি এক্সপ্রেস ট্রেনসহ ঢাকা-কলকাতার মধ্যে চলাচলকারী মৈত্রী এক্সপ্রেস এবং খুলনা-কলকাতার মধ্যে চলাচলকারী বন্ধন এক্সপ্রেস ট্রেনও বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। এদিকে এ বিষয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেন জানান, বাংলাদেশ রেলওয়ে থেকে মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়া হবে। আগেও আন্তঃদেশীয় যাত্রীবাহী ট্রেন চালানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ট্রেন চালাতে বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রস্তুতির কোনো কমতি নেই। ভারত চাইলে যে কোনো সময় ট্রেন চালানো যাবে। অন্যদিকে এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ এশিয়া শাখার এক কর্মকর্তা জানান, এটি মূলত কূটনৈতিক ইস্যু। বাংলাদেশ সরকার ও ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের সমঝোতার ওপর বিষয়টি আগাবে। আগেও চেষ্টা হয়েছে, চিঠি দেয়া হয়েছে। তার চেয়ে বেশি কিছু বলার সুযোগ নেই। তবে ভারত আগের চিঠিগুলোর জবাবে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো চিঠি দেয়নি। সার্বিক বিষয়ে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফাহিমুল ইসলাম জানান, যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলে ভারতকে এর আগেও চিঠি দেয়া হয়েছে। কিন্তু কোনো জবাব মেলেনি। গত জানুয়ারি মাসে দিল্লিতে আইজিআরএমের মিটিং হয়েছে। সেখানেও আন্তঃদেশীয় যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বিষয়টি আলোচনায় উঠেছে। তখন বৈঠকে অংশ নেয়া ভারতের প্রতিনিধি দল নিরাপত্তা ঝুঁকির কথা বলেছিল। সেফটি কনসার্ন (নিরাপত্তা ইস্যু) দেখিয়ে ভারত ট্রেন চালাতে রাজি হয়নি। তারপর এই সময়ে তারা আর কিছু বলেনি। তাই আরেকবার চিঠি দেয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স